কাউন্সিলর সাহাব উদ্দিন সিকদারের ভাই ছাত্রদল নেতা ইমরান ইয়াবাসহ আটক-TCN 24
প্রকাশিতঃ 1:35 am | July 11, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজার
কক্সবাজার পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাহাব উদ্দিন সিকদারের ছোট ভাই ইমরান হোসেন (২৬) কে ইয়াবাসহ আটক করেছে পুলিশ। তিনি আলিরজাহাল এলাকার মাস্টার মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে।
শুক্রবার (১০ জুলাই) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির একটি টিম শহরের আলির জাহালের টি এম সি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে ৫০ পিচ ইয়াবাসহ আটক করে।
সূত্র জানায়, ইমরানকে আটকের সময় কাউন্সিলর শাহাব উদ্দিন সিকদারের কয়েকজন বন্ধুর সাথে ইয়াবা ট্যাবলেটের লেনদেন হওয়ার কথা ছিল। এই সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্যান্য মাদক কারবারিরা পালিয়ে যায়। কাউন্সিলের বন্ধু অবৈধ স্বর্ণ চোরাচালানকারী চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী (মাহাদুল করিম মাদু) মাদক মামলায় আটকের পর জেল থেকে বের হয়ে সিন্ডিকেট করে পুরোদমে করে আসছে ইয়াবা ব্যবসা। কক্সবাজার শহরের ৬ নং ওয়ার্ডের আওতাধীন সিটি কলেজ এলাকায় কাউন্সিলর শাহাব উদ্দিন সিকদার নিজস্ব জায়গায় তৈরি করেছে বিলাসবহুল বাংলো। এলাকাবাসীর তথ্যমতে, রাতের বেলা মদ, জুয়া ও ইয়াবাসহ সুন্দরী নারীদের নিয়ে চলে অসামাজিক কার্যকলাপ। এসব বিষয়ে সঠিক তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে মাদকের গডফাদার খ্যাত শাহবুদ্দিন শিকদারের আসল চরিত্র।
মাদক চোরাচালানকারী ইমরান আটকের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ ইয়াছিন। তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইমরান হোসেনকে আটক করা হয়। তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার সময় কাউন্সিলর শাহাব উদ্দিন সিকদারের উস্কানিতে কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোকজন বাঁধা দেয়। ভাংচুর করে পুলিশের গাড়ি। এসময় আসামী ছিনিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা চালানো হয়। পরে সদর মডেল থানা থেকে অতিরিক্ত ফোর্স গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা রুজু করার চেষ্টা চলছে।
স্থানীয়রা জানান, আটক ইমরান সিটি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভাইয়ের ছত্রছায়ায় ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে। কাউন্সিলরের ভাই হওয়ায় তিনি এলাকায় কায়েম করেছে সন্ত্রাস ও মাদকের রাম-রাজত্ব। কেউ তাদের বিরুদ্ধে ভয়ে মুখ খোলার সাহস পায় না। মুখ খুললে শিকার হতে হয় চরম নির্যাতনের।
অভিযোগ রয়েছে, কাউন্সিলর শাহাব উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসা করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনেছে। কাউন্সিলর হওয়ার পর থেকে তার ভাই এমরানসহ কাছের লোকজন দিয়ে তারা ইয়াবা সাম্রাজ্য কৌশলে চালিয়ে যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারীর ঘটনা রয়েছে। সম্প্রতি মাদক ব্যবসা, নারী কেলেংকারী ও বিএনপি-জামাতের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন অপকর্মের জন্য এক বিবৃতিতে কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ শাহাব উদ্দিন সিকদারকে কাউন্সিলর পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ মো. শাহজাহান কবির বলেন, মাদক ব্যবসায়ীরা যতই শক্তিশালী হোক কোনভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। আটক এমরানের সাথে আর কারা রয়েছে জিজ্ঞাসাবাদে বের হয়ে আসবে। এছাড়া পুলিশের কাজে বাঁধা দেয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নেয়া হবে।
এদিকে কক্সবাজার পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষের দাবী, মানহানি ও ভয়ভীতির কারণে কাউন্সিলর সাহাব উদ্দিন সিকদারের ছোট ভাই ইমরানের নৈরাজ্য,সন্ত্রাস ও ইয়াবা ব্যবসার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে পারছে না। মাদক কারবারি ইমরানকে আটকের পর ৫ নং ওয়ার্ডে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন এলাকাবাসী। আটককৃত ইমরানকে প্রশাসনিকভাবে কঠোর চাপ প্রয়োগ করলে বের হয়ে আসবে প্রকৃত ইয়াবা গডফাদারের নাম।